ভিকসিত ভারত @2047

বন্ধুগণ,

প্রেরণার জন্য আমাদের সকলের সামনেই রয়েছে স্বাধীনতার জন্য আমাদের দীর্ঘ সংগ্রাম। আমরা যখন এক লক্ষ্য নিয়ে, এক উদ্যমে, এক আবেগে, স্বাধীনতাকে পরম লক্ষ্য মনে করে মাঠে নামি, তখন আমরা সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হই। এই সময়ে সত্যাগ্রহ, বিপ্লবের পথ, স্বদেশী সম্পর্কে সচেতনতা, সামাজিক ও শিক্ষাগত সংস্কারের চেতনা - এই সব ধারা একসঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলনের শক্তি হয়ে উঠেছিল। এ সময় মো, কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন অনেক প্রতিষ্ঠান, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী, গুজরাত বিদ্যাপীঠ, নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়, আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয়, অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়, আর কেরালা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের চেতনাকে শক্তিশালী করেছে। এটাই ছিল সেই সময়, যখন প্রতিটি অংশের যুবক-যুবতীর মধ্যে স্বাধীনতা সম্পর্কে এক নতুন চেতনা সঞ্চারিত হয়েছিল। একটি গোটা তরুণ প্রজন্ম স্বাধীনতার জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে এগিয়ে এসেছিল। দেশে একটা ভাবনা তৈরি হয়েছিল, যা করতে হবে, স্বাধীনতার জন্য করতে হবে, এখন করতে হবে। কেউ চরকা কাতত আর সেটাও স্বাধীনতার জন্য। কেউ বিদেশি পণ্য বয়কট করতেন, তাও স্বাধীনতার জন্য। কেউ কবিতা আবৃত্তি করত, সেটাও স্বাধীনতার জন্য।

একইভাবে, আজ প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান, প্রত্যেক সংগঠনকে এই সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে যে, আমি যা-ই করি না কেন, তা উন্নত ভারতের জন্য হোক। আপনাদের লক্ষ্য, আপনাদের মুক্তি কেবলমাত্র একটি উন্নত ভারত হওয়া উচিত। একজন শিক্ষক হিসেবে ভেবে দেখুন, উন্নত ভারতের লক্ষ্য অর্জনে দেশকে কী সাহায্য করবেন? বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আপনার চিন্তা করা উচিত, ভারতের দ্রুত উন্নতির জন্য কী করা উচিত? আপনারা যে অঞ্চলে আছেন, সেখানে কী হবে, ভারত কিভাবে উন্নত হওয়ার পথে দ্রুত এগিয়ে যাবে?

বন্ধুগণ,

আমি যখন পরামর্শের কথা বলি, তখন আপনার সামনে আকাশ প্রশস্ত। দেশে এমন একটি অমর প্রজন্ম তৈরি করতে হবে, যারা আগামী বছরগুলোতে দেশের নেতা হবে, যারা দেশকে নেতৃত্ব দেবে, দিকনির্দেশনা দেবে। আমাদের দেশের এমন একটি চারাগাছ প্রস্তুত করতে হবে, যিনি জাতীয় স্বার্থকে সর্বোপরী রাখবেন, যিনি নিজের কর্তব্যকে সর্বোপরী রাখবেন। আমাদের শুধু শিক্ষা ও দক্ষতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে না। দেশের নাগরিকরা যাতে 24 ঘণ্টা সজাগ থাকে, সে জন্য নাগরিক হিসেবে এ বিষয়ে প্রচেষ্টা বাড়ানো প্রয়োজন। সেই চেতনাকে আমাদের সমাজে আনতে হবে, ক্যামেরা লাগানো হোক বা না হোক, মানুষ যেন ট্রাফিকের লালবাতি লাফিয়ে না পড়ে। মানুষের এমন উচ্চ কর্তব্যবোধ থাকা উচিত যে, তারা যথাসময়ে অফিসে পৌঁছে দায়িত্ব পালনের জন্য কাজে এগিয়ে যান। মানুষের এমন উচ্চ কর্তব্যবোধ থাকা উচিত যে, তারা যথাসময়ে অফিসে পৌঁছে দায়িত্ব পালনের জন্য কাজে এগিয়ে যান। এখানে যে পণ্যই তৈরি হোক না কেন, তার গুণগত মান এতটাই উন্নত হওয়া উচিত যে, 'মেড ইন ইন্ডিয়া' দেখে ক্রেতার গর্ব বাড়ে। যখন দেশের প্রতিটি নাগরিক, তিনি যে ভূমিকাই পালন করুন না কেন, তাঁর দায়িত্ব পালন শুরু হবে, তখন দেশও এগিয়ে যাবে। এখন এটি প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কিত একটি বিষয়। যখন জল সংরক্ষণের ব্যাপারে গাম্ভীর্য বাড়বে, যখন বিদ্যুত্ সাশ্রয়ের ব্যাপারে গাম্ভীর্য বাড়বে, যখন মা মাটিকে বাঁচাতে রাসায়নিকের ব্যবহার কমবে, যখন গণপরিবহনের সর্বোচ্চ ব্যবহারে গুরুত্ব থাকবে, তারপর সমাজ, দেশ, সব জায়গাতেই এলাকায় ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ রকম অনেক উদাহরণ দিতে পারি।

আপনিও একমত হবেন যে এগুলো ছোট ব্যাপার কিন্তু এগুলোর প্রভাব অনেক বড়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য জনসাধারণের আন্দোলনকে চাঙ্গা করতেও আপনার পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমাদের তরুণরা কীভাবে আধুনিক জীবনধারার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে তার জন্য আপনার পরামর্শগুলি গুরুত্বপূর্ণ হবে৷ তাদের ভার্চুয়াল জগতের পাশাপাশি, তরুণদের জন্য তাদের চারপাশের বিশ্ব অন্বেষণ করা অপরিহার্য৷ একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে, বর্তমান এবং ভবিষ্যত উভয় প্রজন্মের মধ্যে এই ধরনের অনেক ধারণা তৈরি করা আপনার দায়িত্ব। আপনাকে অবশ্যই আপনার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি রোল মডেল মূর্ত করতে হবে। নাগরিকরা যখন দেশের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেয়, তখন এটি একটি শক্তিশালী সমাজের ভিত্তি স্থাপন করে। আপনি জানেন যে, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রায়শই শাসন ও প্রশাসনে প্রতিফলিত হয়। শিক্ষাক্ষেত্রের কথা যদি বলি, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় রয়েছে। যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক বছর অধ্যয়নের পর সার্টিফিকেট এবং ডিগ্রি প্রদান করে, আমাদের কি নিশ্চিত করা উচিত নয় যে প্রতিটি শিক্ষার্থী ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করে? শুধুমাত্র এই ধরনের আলোচনা এবং তাদের সাথে সম্পর্কিত পরামর্শ একটি উন্নত ভারতের দিকে পথ পরিষ্কার করবে। অতএব, প্রতিটি ক্যাম্পাসে, প্রতিটি ইনস্টিটিউটে এবং রাজ্য স্তরে এই বিষয়গুলির উপর চিন্তাভাবনা করার একটি ব্যাপক প্রক্রিয়া হিসাবে আপনার এগিয়ে যাওয়া উচিত।