বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস প্রতি বছর 31শে মে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এরউদ্যোগে শুরু হওয়া এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং অর্থনীতির ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এই দিনটি ব্যক্তি, সমাজ এবং সরকারকে একত্রিত হয়ে তামাক ব্যবহার হ্রাস করার এবং একটি তামাক-মুক্ত সমাজ গড়ে তোলার জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।
এই দিনটি ধূমপান ও ধূমপানযোগ্য নয় উভয় ধরনের তামাক সেবনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। এটি জনস্বাস্থ্যের প্রতি অঙ্গীকারকে পুনরায় নিশ্চিত করে এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, আচরণগত পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অ-সংক্রামক রোগের বোঝা কমাতে জাতীয় উদ্যোগগুলিকে সমর্থন করে।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস তরুণদের শিক্ষিত করার, অংশীদারদের এর সাথে যুক্ত করার এবং সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য (COTPA) আইন, 2003,, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (NTCP),এবং WHO-এর তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (WHO FCTC)-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার বাস্তবায়ন জোরদার করার একটি সুযোগ।.
31শে মে 2025 বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন স্কুল শিক্ষা ও সাক্ষরতা বিভাগ (DoSEL), দেশের সকল স্কুলকে আহ্বান জানিয়েছে তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করে একটি সার্বভারতীয় স্কুল চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে।এই চ্যালেঞ্জের মূল উদ্দেশ্য হলো তামাক ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। চ্যালেঞ্জে চারটি কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে র্যালি, নুক্কড় নাটক (পথনাটিকা), পোস্টার এবং স্লোগান/কবিতা লেখা - যেগুলোর মাধ্যমে স্কুলগুলো স্থানীয় সম্প্রদায়কে তামাক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে পারবে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, স্কুলগুলো র্যালি, পথনাটক, পোস্টার তৈরি এবং স্লোগান/কবিতা লেখা সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে, যাতে সর্বাধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করতে পারে: তামাককে বলুন না, সুস্থতাকে বলুন হ্যাঁ এই বার্তাটি প্রচার করা যায়। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের পরিবর্তনের দূত এবং একটি তামাকমুক্ত প্রজন্ম গঠনের অনুঘটক হিসেবে গড়ে তোলা। উল্লেখিত চারটি কাজ/কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের জনসচেতনতা বৃদ্ধির, জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার এবং স্বাস্থ্যকর, তামাকমুক্ত জীবনযাপনকে উৎসাহিত করার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস 2025 উপলক্ষে আয়োজিত সার্বভারতীয় স্কুল চ্যালেঞ্জ একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা 31শে জুলাই 2025 পর্যন্ত চলবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ছাত্রছাত্রী ও সমাজের মধ্যে তামাক ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং শিশুদের একটি সুস্থ সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের দূত হিসেবে গড়ে তোলা।
তামাক এখনও একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সংকট হিসেবে রয়ে গেছে, যা প্রতি বছর অগণিত প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবার ও সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করছে। এই চ্যালেঞ্জটি স্কুলগুলোর জন্য একটি সুযোগ এনে দিয়েছে, যেখানে তারা তাদের ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুত করতে পারবে, যাতে তারা নিজ নিজ পাড়া-প্রতিবেশী ও আশপাশের অঞ্চলে তামাক বর্জনের শক্তিশালী বার্তাটি ছড়িয়ে দিতে নেতৃত্ব গ্রহণ করতে পারে এবং বলতে পারে: তামাককে বলুন না, সুস্থতাকে বলুন হ্যাঁ
এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণকারী স্কুলগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে সর্বাধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রী চারটি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে এবং তাদেরকে সৃজনশীল ও অর্থবোধকভাবে মত প্রকাশে উৎসাহিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা তাৎপর্যপূর্ণ পোস্টার তৈরি করতে পারে, চিন্তাজাগানিয়া স্লোগান ও কবিতা রচনা করতে পারে, নুক্কড় নাটক (পথনাটিকা) পরিবেশন করতে পারে এবং র্যালির মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, যাতে বার্তাটি সর্বাধিক পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ে। এই সৃজনশীল প্রচেষ্টা জনসম্পৃক্ততার শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং তামাকের ব্যবহারের বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি স্কুলকে একটি কেন্দ্রীয় কর্মকর্তা নির্ধারণ করতে হবে (প্রধান শিক্ষক, কোনো শিক্ষক অথবা প্রশাসনিক কর্মী)। স্কুলকে প্রতিযোগিতার জন্য যোগ্য বিবেচনা করতে হলে সেই কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাকে মাইগভ ইনোভেট প্ল্যাটফর্মে রেজিস্টার্ড করতে হবে। প্রতিটি অংশগ্রহণকারী স্কুলকে তাদের অংশগ্রহণ সম্পূর্ণ করতে হলে নিচে উল্লেখিত ছবি অথবা ভিডিও লিঙ্ক জমা দিতে হবে।
র্যালির জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
i. মোট র্যাংকিংয়ে চারটি কার্যক্রমের জন্য নিম্নলিখিত মান নির্ধারিত থাকবে:
কার্যক্রম |
মান |
র্যালি |
40 % |
পোস্টার |
20 % |
স্লোগান/কবিতা |
20 % |
নুক্কড় নাটক |
20 % |
মোট স্কোর |
100 মার্কস |
ii. র্যালির মূল্যায়ন 3টি স্তরে করা হবে: জেলা/রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল স্তর এবং জাতীয় স্তর।
জেলা, রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের বিচারকমণ্ডলীর সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচিত সর্বাধিক উৎকৃষ্ট স্কুলগুলোকে জাতীয় স্তরে সংবর্ধিত করা হবে। এই স্কুলগুলোর সব অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীকে একটি করে মেডেল ও প্রশংসাপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়াও, বিজয়ী স্কুলটি PM e-Vidya চ্যানেলগুলিতে প্রদর্শিত হওয়ার সুযোগ পাবে।
সারণি 1: রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অনুযায়ী অংশগ্রহণের সংখ্যা (স্কুলের সংখ্যার ভিত্তিতে) যা জাতীয় স্তরে পাঠানো হবে।
রাজ্য স্তরের এন্ট্রি |
স্কুলের সংখ্যা |
রাজ্যসমূহ |
6 |
14,999 বা তার কম |
|
8 |
15,000 24,999 স্কুল |
হিমাচল প্রদেশ (17,826), হরিয়ানা (23,517), উত্তরাখণ্ড (22,551) |
10 |
25,000 44,999 স্কুল |
পাঞ্জাব(27,404), জম্মু ও কাশ্মীর (24,296), ঝাড়খণ্ড (44,475) |
12 |
45,000 59,999 স্কুল |
আসাম (56,630), ছত্তিশগড় (56,615), গুজরাট (53,626) ও তেলেঙ্গানা (42,901) |
14 |
60,000 74,999 স্কুল |
ওড়িশা (61,693) এবং অন্ধ্র প্রদেশ (61,373) |
16 |
75,000 99,999 স্কুল |
কর্ণাটক (75,869), পশ্চিমবঙ্গ (93,945) ও বিহার (94,686) |
18 |
1,00,000 1,23,411 স্কুল |
মহারাষ্ট্র (1,08,237) ও রাজস্থান (1,07,757) |
20 |
1,23,411 টিরও বেশি স্কুল |
মধ্যপ্রদেশ (1,23,412) এবং উত্তর প্রদেশ (2,55,087) |
উৎস: UDISE+ 2023-24